বাগনানে ঝাড়খন্ডের অভিনেত্রীকে গুলি করে খুনের অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিনিধি, হাওড়া নিউজ ২৪, বাগনান- ছিনতাইয়ে বাধা দেওয়ায় গাড়ির মধ্যে নিজের আড়াই বছরের মেয়ের চোখের সামনে ঝাড়খন্ডের একটি ইউটিউবের নামী অভিনেত্রীকে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করে খুনের অভিযোগ উঠল দুস্কৃতীদের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার সকালে ১৬ নং জাতীয় সড়কে বাগনান থানার চন্দ্রপুরে। মৃত অভিনেত্রীর নাম রিয়া কুমারী ওরফে ইশা আলিয়া (৩০)। বাড়ি ঝাড়খন্ডের রাঁচিতে। রাজাপুর থানার পুলিশ মৃতদেহটি উলুবেড়িয়া মেডিকেল কলেজে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। পাশাপাশি পুলিশ মৃত অভিনেত্রীর স্বামী প্রকাশ কুমার ওরফে প্রকাশ আলবেলাকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
জানা গেছে বুধবার সকালে চন্দ্রপুরের কাছে ছিনতাইয়ে বাধা দেওয়ায় রিয়াকে খুনের আভিযোগ ওঠে দুস্কৃতীদের বিরুদ্ধে। ঘটনার পর মৃত অভিনেত্রীর স্বামী স্ত্রী রিয়াকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য কুলগাছিয়া পীরতলায় স্থানীয় বাসিন্দাদের সাহায্য চায়। সেই সময় গাড়ির মধ্যে মহিলাকে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে তারা পুলিশে খবর দিলে রাজাপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে মহিলাকে উলুবেড়িয়া মেডিকেল কলেজে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষনা করে।
এদিকে এই ঘটনার পরেই ঘটনাস্থলে পৌছায় হাওড়া গ্রামীন জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্বাথী অলকনন্দা ভাওয়াল, উলুবেড়িয়ার এসডিপিও সিদ্ধার্থ ধাকোলা। তারা প্রকাশকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করার পাশাপাশি বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখেন। এসডিপিও সিদ্ধার্থ ধাকোলা জানান তদন্তের স্বার্থে এখন কিছু বলা যাচ্ছেনা। সবদিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
অন্যদিকে মৃত অভিনেত্রীর স্বামী প্রকাশের বক্তব্য কলকাতার শ্রীরাম মার্কেটে স্ত্রীর নাচের সরঞ্জাম কেনার জন্য রাঁচি থেকে স্ত্রী ও কন্যাকে নিয়ে কলকাতায় যাচ্ছিলাম। ভোরে মেয়ে দুধ খাওয়ার জন্য কান্নাকাটি করাতে আমি জাতীয় সড়কের পাশে গাড়ি দাঁড় করাই এবং বাথরুম করার জন্য গাড়ি থেকে নীচে নামি। প্রকাশ জানান সেইসময় একটা সাদা গাড়িতে করে ৩ ব্যাক্তি আমার গাড়ির পাশে এসে দাঁড়ায়। এক বাক্তি নীচে নামার পর আমি আমার পকেট থেকে ব্যাগ বের করার চেষ্টা করে। আমি বাধা দিতে গেলে আমাকে ধাক্কা মারে। বিষয়টি দেখে আমার স্ত্রী বাবু বাবু বলে চিৎকার করলে আমি একটা আওয়াজ শুনতে পাই। পরে দেখি ওই তিন ব্যাক্তি গাড়িতে উঠে পালিয়ে যাচ্ছে এবং পিছনের সীটে স্ত্রী রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। প্রকাশ জানান ঘটনার পরেই আমি গাড়িতে করে স্ত্রীকে নিয়ে কাছেই একটি বাড়িতে গেলেও দরজা বন্ধ থাকায় রাস্তায় থাকা পুলিস কর্মীকে সাহায্যের কথা বলি। যদিও পুলিশ আমাকে সাহায্য না করে স্ত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে। তার অভিযোগ এরপর আমি একটি কারখানায় গেলেও সেখানে কোন সাহায্য মেলেনি।
অপরদিকে পীরতলার বাসিন্দারা জানান বুধবার সকাল ৬টা ১৫ মিনিট নাগাদ ওই ব্যাক্তি গাড়ি নিয়ে এখানে আসে। গাড়ির ভিতরে থাকা ওই ব্যাক্তি আমাদের কাছে হাসপাতালে যাওয়ার জন্য রাস্তা জানতে চায়। আমরা কারন জানতে চাইলে উনি জানান স্ত্রীকে দুস্কৃতীরা গুলি করেছে। এরপর আমরা গাড়ির ভিতরে লক্ষ্য করে দেখি এক মহিলা মৃত অবস্থায় পড়ে চে। পরে আমরা পুলিশে খবর দিলে রাজাপুর থানার পুলিশ এসে ওদের নিয়ে যায়।