১৬ নং জাতীয় সড়কে অ্যাম্বুলেন্সের ধাক্কায় মা ও মেয়ের মৃত্যু
নিজস্ব প্রতিনিধি, হাওড়া নিউজ ২৪, উলুবেড়িয়া- মায়ের সঙ্গে বৃত্তি পরীক্ষা দিতে যাওয়ার পথে বাস ধরার জন্য রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকার সময় বেপোরোয়া অ্যাম্বুলেন্সের ধাক্কায় মৃত্যু হল মা ও মেয়ের। মৃতেরা হল অর্পনা পাড়াল (৪০) ও টুসু পাড়াল (১০)। দুর্ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার সকালে ১৬ নং জাতীয় সড়কে উলুবেড়িয়া থানার জগৎপুর জোড়াকলতলায়। দুর্ঘটনায় নজরুল খান নামে এক সাইকেল আরোহী গুরুতর আহত অবস্থায় উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
জানা গেছে বাগনান আর্দশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতূর্থ শ্রেনীর ছাত্রী টুসু পাড়ালের বৃত্তি পরীক্ষা চলছে। শনিবারেও তার পরীক্ষা চলছিল। সকাল ৬টা নাগাদ টুসু মা অর্পনা পাড়ালের সঙ্গে বাড়ি থেকে বেরিয়ে বাগনান যাওয়ার বাস ধরার জন্য জোড়াকলতলায় দাঁড়িয়ে ছিল। স্থানীয় সূত্রে খবর সকাল ৬টা ৩০ নাগাদ বেপরোয়াভাবে কোলাঘাট অভিমুখে যাওয়া একটি অ্যাম্বুলেন্স নিয়ন্ত্রন হারিয়ে প্রথমে সাইকেল আরোহীকে পরে মা ও মেয়েকে ধাক্কা মারে।
অ্যাম্বুলন্সের ধাক্কায় তিনজনেই রাস্তায় ছিটকে পড়ে। ঘটনাস্থলেই মা ও মেয়ের মৃত্যু হয়। দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হওয়া নজরুল খানকে উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়। এদিকে দুর্ঘটনার পরেই এলাকার মানুষ ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। তারা ঘাতক অ্যাম্বূলেন্সে আগুন ধরিযে দেয়। পাশাপাশি মৃতদেহ আটকে রেখে জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। ক্ষুব্ধ জনতা রাস্তার উপর টায়ার জ্বালিয়ে, গাছের ডাল ফেলে পথ অবরোধ করে।
এদিকে জাতীয় সড়ক অবরোধ হওয়ার পরেই দুটি লেনে যান চলাচল স্তব্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘক্ষন অবরোধ চলায় জাতীয় সড়কে গাড়ির লম্বা লাইন পড়ে যায়। এদিকে দুর্ঘটনার পরেই ঘটনাস্থলে পৌছায় উলুবেড়িয়া থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। নামানো হয় র্যাফ। অ্যাম্বুলেন্সের আগুন নেভাতে ঘটনাস্থলে পৌছায় দমকলের একটি ইঞ্জিন। পরিস্থিতি সামলা দিতে অন্য থানা থেকেও প্রচুর পুলিশ নিয়ে আসা হয়।
এদিকে দীর্ঘক্ষন পথ অবরোধ চলার পর ঘটনাস্থলে পৌছায় হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অলকনন্দা ভাওয়াল ও ইন্দ্রজিৎ সরকার। পুলিশের কর্তারা দীর্ঘক্ষন বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনা করেন। পরে প্রায় ৪ ঘন্টা অবরোধ চলার পর পুলিশ মৃদ্যু লাঠিচার্জ করে বিক্ষোভকারীদের হটিয়ে জাতীয় সড়ক অবরোধমুক্ত করে এবং মৃতদেহদুটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তে পাঠায়। এদিকে দুর্ঘটনার পরেই অ্যাম্বুলেন্স চালক পালিয়ে যায়।