জলে নামল ছট, নতুন করে তৈরী ইতিহাস

Spread the love

নিজস্ব প্রতিনিধি,হাওড়া নিউজ ২৪, শ্যামপুর- ৩০ বছর আগে শ্যামপুরের ডিহিমন্ডলঘাটের নৌকা শিল্পী বছর ৭০ এর পঞ্চানন মন্ডল নিজের হাতে শেষ নৌকা “ছট” তৈরী করেছিলেন। আর ঠিক ৩০ বছর পরে বৃহস্পতিবার আবার পঞ্চানন মন্ডলের হাতে তৈরী “ছট” জলে নামল। দীর্ঘদিন পর প্রাচীন এই ছট নৌকাকে দীর্ঘদিন পরে আবার জলে নামা দেখতে বৃহস্পতিবার সকালেই  কয়েক শতাধিক মানুষ ছুটে এসেছিলেন রূপনারায়ণ নদীর তীরে। শাঁখ, কাঁসর ঘন্টা বাজিয়ে উলুধ্বনি দিয়ে নৌকার সামনে নতুন বস্ত্র বেঁধে, ধুপ, ধুনো দেখিয়ে রীতিমত পুজো করা হল। তারপরে সকলে মিলে ছটকে ঠেলে নদীতে নামল। অবশ্য নৌকায় পাল তুলে নদীতে ঘুরে বেড়ালো গ্রামবাসীরা।

ছট নৌকা তৈরীর অন্যতম উদোক্তা ভারতের এনথ্রোপলজি বিভাগের গবেষক স্বরুপ ভট্টাচার্য জানান নৌকা তরীর পর নৌকাটি ঠিকমত জলে ভাসছে কিনা, নৌকায় জল ঢুকছে কিনা, পাল তুলে ঠিকমত চলছে কিনা সেটা পরীক্ষা করতেই এদিন ছটকে পরীক্ষামূলকভাবে জলে নামানো হল। তিনি বলেন এরপর নৌকাটি গুজরাটের ন্যাশানাল মেরিটাইম মিউজিয়ামে চলে যাবে। ইন্ডিয়ান নেভির আফিসাররা নৌকাটি নিয়ে যাবেন। তিনি জানান এই নৌকা তৈরীর যাবতীয় তথ্য ভিডিও ডিজিটাইড আকারে ব্রিটিশ মিউজিয়ামে রাখা থাকবে।

স্বরূপ ভট্টাচার্য্য দাবি করেন ভারতবর্ষে এই প্রথম এই ধরনের কাজ হল। তিনি বলেন শুধু প্রাচীন নৌকা বানানোটা আমাদের মূল উদ্দ্যেশ নয় আমাদের এখানে যে এত কারিগর আছে,এত তাদের সুক্ষ বিদ্যা আছে, তাদের এত দক্ষতা আছে সেগুলো সকলকে জানানোর জন্য আমাদের উদ্যেগ।

প্রসঙ্গত ইংল্যান্ডের সংস্থা এনডেঞ্জার্ড মেটেরিয়াল নলেজ প্রোজেক্ট এবং ভারতের যৌথ উদ্যোগে হারিয়ে যাওয়া শতাব্দী প্রাচীন এই ছট নৌকা তৈরী করা হয়েছে। ৩৫ ফুট লম্বা এবং ৯ ফুট চওড়া  ও ৭/৮ ফুট উচ্চতার এই নৌকা তৈরী করতে সময় লেগেছে প্রায় একমাস। শ্যামপুরের ডিহিমন্ডলঘাটের বাসিন্দা নৌকা শিল্পী পঞ্চানন মন্ডল তার ৪ ছেলে অমল মন্ডল, মনিমোহন মন্ডল, দিলীপ মন্ডল এবং দীপকে মন্ডলকে নিয়ে নৌকাটি তৈরী করেছেন। নৌকা তৈরীর পুরো কাজ দেখাশোনা করছেন ব্রিটেনের এক্সটার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জন পি কুপার, হরিয়ানা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বসন্ত সিন্ধে এবং ভারতের এন্থ্রোপোলজি বিভাগের গবেষক স্বরূপ ভট্টাচার্য এবং বিট্রিশ এক বিশ্বাবিদ্যালয়ের  ছাত্র জিসান আলি শেখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *